তেল কীভাবে লাগাবেন
সাপ্তাহে একদিন হট অয়েল ট্রিটমেন্ট ট্রাই করুন। নারকেল তেল গরম করে স্ক্যাল্পের হালকা
হাতে ঘষুন। গরম পানিতে তোয়ালে
ডুবিয়ে নিংড়ে নিন। তারপর তোয়ালে মাথায়
জড়িয়ে রাখুন। সহজে তেল চুলের
গোড়ায় ঢুকে যাবে। পরের দিন শ্যাম্পু
করে নিন।
শ্যাম্পু করার
খুঁটিনাটি
নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বেছে নিন। শুস্ক, স্বাভাবিক,
তৈলাক্ত বা কালারড হেয়ারের জন্যে আলাদা আলাদা শ্যাম্পু ব্যবহার
করুন। শ্যাম্পু করার আগে চুল ভাল করে আঁচরে নিন। চুলের জট তো ছাড়বেই, সঙ্গে ময়লাও পরিস্কার
হবে, মরা কোষ ঝরে পড়বে। শ্যাম্পু করার জন্যে খুব গরম পানি ব্যবহার করবেন না। স্ক্যাল্প ও হেয়ার ফলিকলসের জন্যে গরম পানি ক্ষতিকর। ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানি ব্যবহার
করুন। নানারকমের কেমিকেল- সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দেখে
কোনটা ব্যবহার করবেন বুঝতে না পারলে মাইল্ড হার্বাল শ্যাম্পু বেছে নিন। নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী অল্প পরিমাণে
শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কয়েক সাপ্তাহ অন্তর
শ্যাম্পু বদলান। এর নানারকম উপাদানে
চুল সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।
চুল পরিস্কার
করার পদ্ধতি
শ্যাম্পু করার পর ভাল করে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলে যেন একদম ফেনা না লেগে থাকে। পানি দিয়ে চুল ধোয়ার পর চুল চ্যাটচ্যাট
করলে বা চুলে জট থাকলে বা আপনার যদি মনে হয় আর একবার শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভাল হয়
তখন দ্বিতীয়বার শ্যাম্পু করবেন। তবে দ্বিতীয়বার অল্প পরিমাণে শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
কন্ডিশনিং
চুল ধোয়ার পর মাথায় তোয়ালে জড়িয়ে নিন।
অতিরিক্ত পানি তোয়ালে শুষে নেবে। তারপর কন্ডিশনার লাগান চুলের ডগায় ও ওপরের অংশে। ৫-৬ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
সাঁতার ও চুলের
যত্ন
সাতাঁর কাটার আগে চুল ভাল করে ভিজিয়ে নেবেন। চুলে ময়েশ্চার বেশি থাকলে অয়ানির ক্লোরিন
বা লবন পানি চুলের বেশি ক্ষতি করবে না। সাতাঁরের পর চুল ভাল করে ধুয়ে ভাল কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন।
ফাইনাল টাচ
ভিজে চুল আঁচড়াবেন না। চুল ছিঁড়ে যাবে। চুল শুকনো হয়ে গেলে আরো সেনসিটিভ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে চুল আঁচড়ান। খুব জোরে বা টেনে ধরে চুল আঁচড়াবেন না। চুল লম্বা হলে রাতে শুতে যাওয়ার আগে চুল
বেঁধে শোবেন। গরমের সময় চুল শুকনো
করার জন্য ব্লো-ডাই না ব্যবহার করতে পারলেই ভাল। কারন শুষ্ক আবহাওয়ায় ব্লো-ডাই করলে চুলের কিউটিকলসের ক্ষতি
হয়। চুল আরো ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তোয়ালে দিয়ে হালকাভাবে চুল মুছে নিন। তারপর ভাল কোম্পানির হেয়ার জেলও লাগাতে
পারেন।
ব্রাশ পরিষ্কার
রাখার উপায়
ঈষদুষ পানিতে সাবান গুলে চিরুনি, হেয়ারব্রাশ পরিষ্কার
করুন। ভাল করে চিরুনির ফাঁকগুলো পরিষ্কার করবেন। চুলের ময়লা ধুয়ে যাবে। সম্ভব হলে আগের দিন রাত্রে চিরুনি ও ব্রাশ
সাবান পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। চিরুনির দাঁড়া ভেঙ্গে গেলে বা দাঁড়াগুলো ধারালো হয়ে গেলে সেই চিরুনি বদলে ফেলুন। কারন ভাঙ্গা ও ধারালো চিরুনির দাঁড়া থেকে
স্ক্যাল্পের ক্ষতি হতে পারে। অন্যের চিরুনি, হেয়ারব্রাশ ব্যবহার করবেন না।
সানবার্ন ও
চুলের সমস্যা
কেরাটিন, জোজোবা অয়েল, প্লোটিন- সমৃদ্ধ ডিপ কন্ডিশনার রোদে পোড়া চুলের জন্যে আদর্শ। ইউ ভি প্রোটেকটিভ লিভ ইন কন্ডিশনার গরমের
সময় ব্যবহার করুন। এই ধরনের কন্ডিশনারড
এলোমেলো চুলের জন্য ভাল। সহজে চুলের মধ্যে কন্ডিশনিংযের উপকরনগুলো প্রবেশ করবে।
পাতলা, নেতিয়ে পড়া চুলের জন্যে ওয়াটার বেসড কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুল খুব রুক্ষ লাগলে কন্ডিশনার লাগানোর
পর ভিনিগার ও পানি মিশিয়ে লাগান। ঘরোয়া পদ্ধতি না চাইলে রুক্ষ চুলে সেরাম লাগাতে পারেন। গরমে সমুদ্রের ধারে বেরাতে গেলে সূর্যের হাত থেকে বাঁচতে
চুলে ভারী ও ঘন কোনো হেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার করবেন না। চুলে বালি লেগে চ্যাটচ্যাট করবে। গরমে চুলের ডগা ফেটে যাওয়া, রোদে পোড়ার হাত
থেকে রেহাই পেতে হলে গরমের শুরুতেই চুল ট্রিম করিয়ে নিন। চুল ছোট না করতে চাইলে টুপি ব্যবহার করতে পারেন, স্কার্ফ বা ক্লিপ
দিয়ে চুল বেঁধেও নিতে পারেন। তবে বেশি টাইট করে চুল বাঁধবেন না। খেয়াল রাখবেন চুলের মধ্যে যেন হাওয়া চলাচল করতে পারে। কোনওভাবে রোদে চুল পুড়ে গেলে হেয়ার রিপেয়ারিং মাস্ক ব্যবহার
করুন।
কালারড হেয়ারের
যত্ন
গরমে ঘামে,
কড়া রোদে কালারড হেয়ার সহজেই খারাপ হয়ে যায়। চুলের রঙ হালকা হয়ে যায়। আলট্রাভায়োলেট ফ্লিটার সমৃদ্ধ হেয়ার প্রডাক্ট
ব্যবহার করুন, রোদের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করবে। সাঁতার কাটার পর চুল ভাল করে ধুয়ে নেবেন।
কালারড হেয়ারের জন্যে বিশেষ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তারপর বিশেষ কন্ডিশনার লাগান। হালকা হাতে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছে নিন। জোরে ঘষবেন না। চুলের কিউটিকল নষ্ট হয়ে যাবে, চুলের রঙ হালকা
হয়ে যাবে। মাসে অন্তত একবার
কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট করান।
স্ক্যাল্পে
ঘামের সমস্যা
গরমে তাপমাত্রা বাড়লে শরীর নিজেকে ঠান্ডা রাখার জন্যে ঘাম
নিঃসরণ করে। স্ক্যাল্প ঘামতে
শুরু করে। রাত্রে চুল শুকিয়ে
তারপর বড় দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে ভাল করে চুল আঁচড়ে নিন। সাপ্তাহে ২ দিন অন্তর হার্বাল শ্যাম্পু করুন। চুল শুকিয়ে রোদে বেরোন।
ধুলোময়লা, খুশকির হাত থেকে
রক্ষা পেতে
বাইরে বেরোলে গরমে চুলে ধুলোময়লা লেগে চুল নোংরা হয়ে যায়
তাই নিয়িমিত গোসল করা জরুরি। মাঝে মাঝে চুল আঁচড়ান। ধুলোময়লা সহজে চুল থেকে ঝরে পড়বে।
খুশকির সমস্যা কমবে। হার্বাল অয়েল ও মাসাজ করতে পারেন।
তারপর ন্যাচারাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। খুশকি কমাতে লেবুর রস চুলের গোড়ায় মাসাজ
করতে পারেন। তেলের সঙ্গে আমলকি
মিশিয়ে লাগান। খুশকি কমার সঙ্গে
সঙ্গে মাথাও ঠান্ডা হবে। বেশি কেমিকাল- সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। হেনা, লেবুর রস, ডিম মিশিয়ে চুলে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সাপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি ট্রাই করুন।
ঘরোয়া উপায়ের
ভাল- মন্দ
চুল উজ্জ্বল রাখার জন্যে ভিনিগার, ডিমের সাদা অংশ, কলা ব্যবহার করতে
পারেন। তবে এই উপকরনগুলি সহজে চুলের গভীরে প্রবেশ
করে না। রেডিমেড হেয়ারকেয়ার
প্রডাক্টে এই উপাদানগুলি এমন মলিকিউলার সাইজে থাকে, যাতে সহজে চুলের গোড়ায় উপকরনগুলি প্রবেশ করে চুলের গোড়া মজবুত
করতে পারে। অলিভ অয়েল ব্যবহার
করলে ধুতে সমস্যা হতে পারে।
স্ক্যাল্প
মাসাজের উপকারিতা
চুল পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যেজ্জল রাখার জন্য স্ক্যাল্প মাসাজ
জরুরি। এতে ফলিকলস সক্রিয় থাকে, চুল মজবুত হয়। স্ক্যাল্প মাসাজে টেনশন কমে, রক্ত সঞ্চারন ভাল
হয়। স্ক্যাল্প মাসাজের জন্য আর্দশ নারিকেল
তেল। চুলের ময়শ্চার বজায় থাকে, রোদের হাত থেকে
চুল্কে রক্ষা করে। আমন্ড অয়েলও এর
জন্য ভাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পোস্ট টি দেখার জন্য ধন্যবাদ। কেমন লাগলো কমেন্ট এ জানান, কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।