ভাবুন তো একজন সুদর্শন পুরুষ, যাঁর বসন আর ফ্যাশনে
কোনো কমতি নেই। কিন্তু মাথার চুলে
যদি থাকে খুশকি, তাহলে কোথায় যাবে তাঁর ফ্যাশন! যাঁদের মাথায় খুশকি আছে তারাই ভালো জানেন এর
যন্ত্রণা। অনেকে আবার খুশকির
ভয়ে মাথা কামিয়ে ফেলেন; অথচ একটু সচেতন আর পরিষ্কার
থাকলেই খুশকিমুক্ত থাকা যায়।
‘খুশকি ক্রনিক ধরনের একটি সাধারণ চর্মরোগ। মাথার চামড়ায় বেশি হতে দেখা গেলেও মুখে ও বুকেও অনেকের খুশকি
হয়ে থাকে’, জানালেন চর্মরোগবিশেষজ্ঞ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ আফজালুল
করিম। জীবাণু বা ছত্রাক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে
ত্বকের সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড অতিরিক্ত কর্মক্ষম হয়। ফলে খুশকি হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র পারসোনার ছেলেদের সৌন্দর্যচর্চা শাখার
কর্মী মোল্লা রাকিব হোসেন বলেন, মাথার চুল পড়া, অপরিষ্কার থাকা, রোদে পোড়া, মাথা ঘামা, বংশগত কারণে কিংবা ঋতু বদল হলে চুলে খুশকি হতে দেখা যায়।
এ ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকলেই মাথা খুশকিমুক্ত রাখা যায়। খুশকি সারাতে বাজারে বিভিন্ন ধরনের উপাদান
পাওয়া গেলেও তা কিনতে হবে দেখেশুনে। নামী ব্র্যান্ডের পণ্য কেনা উচিত, আবার সব ব্র্যান্ডের পণ্য সবার জন্য মানানসই হয় না।
যাঁরা ঘরে বসে চুল খুশকিমুক্ত করতে চান, তাঁদের জন্য মোল্লা
রাকিব দুটি পদ্ধতি বলেন। পরিমাণমতো তেল কুসুম গরম করে চুলে ম্যাসাজ করুন। নারকেল বা জলপাই তেল ব্যবহার করতে পারেন। লক্ষ রাখবেন, তেল যেন চুলের গোড়ায়
পৌঁছায়। সপ্তাহে তিন থেকে
চারবার এভাবে ব্যবহার করুন। প্রতিবার ব্যবহারের পর ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া ভিটামিন-ই ক্যাপসুলের সঙ্গে যেকোনো
তেল মিশিয়ে গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করুন। গরম তেল মাথায় সর্বোচ্চ তিন-চার মিনিট রাখুন। এরপর মাথায় ম্যাসাজ করে প্যাক লাগান। টক দই, ডিমের কুসুম,
কন্ডিশনার একসঙ্গে পাত্রে মেখে প্যাক তৈরি করতে হবে। ১২-১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে
ফেলুন। চর্মরোগবিশেষজ্ঞ আফজালুল করিম বলেন, খুশকি সারাতে বাজারে
ভালো মানের অনেক শ্যাম্পু আছে, যা সঠিকভাবে ব্যবহারবিধি মেনে লাগালে চুল খুশকিমুক্ত রাখা যায়। শ্যাম্পু কেনার সময় যে বিষয়ে লক্ষ রাখা
দরকার তা হলো, এতে সিলেনিয়াম সালফাইড, পাইরিথিরিন অথবা টার এই উপাদানগুলো আছে কি না তা দেখে নেওয়া। এই উপাদান থাকলে সে শ্যাম্পু খুশকি সারাতে
কাজে দেবে।
এই শ্যাম্পু প্রতি সপ্তাহে দুবার অন্তত ১০ মিনিট করে রাখলে
ভালো ফল পাওয়া যায় বলে জানান আফজালুল করিম। ভালো মানের হারবাল প্যাকও লাগাতে পারেন।
অনেকে লেবু ও পেঁয়াজের রস মাথায় ব্যবহার করেন। এতে মাথার চুল রুক্ষ হয়ে পড়তে পারে। তাই কন্ডিশনারযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে
হবে। এতে চুলের রুক্ষতা কেটে ঔজ্জ্বল্য ফিরে
আসে।
মাথায় খুশকি হলে কোন দিকে লক্ষ রাখা দরকার, তা জেনে নেওয়া যাক
সৈয়দ আফজালুল করিমের কাছ থেকে। খুশকি হলে মাথা চুলকানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। কারণ, এতে মাথায় জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। ধুলাবালি ও রোদ থেকে চুল যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। খুশকি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয় আর এটি কোনো
ক্ষতিকর রোগও নয়। সঠিক উপাদান শ্যাম্পুতে
আছে কি না দেখে নিন। প্রয়োজনে ২ শতাংশ
ক্যাটাকনাজল-সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পোস্ট টি দেখার জন্য ধন্যবাদ। কেমন লাগলো কমেন্ট এ জানান, কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।